মানবাধিকার।।বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর।।বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়।।৫ম শ্রেণি
মানবাধিকার
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
৫ম শ্রেণি
রচনামূলক/ বর্ণনামূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন: মানবাধিকার কী? মানবাধিকার রক্ষা করা প্রয়োজন কেন? মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের ছয়টি করণীয় লেখ।
উত্তর: মানবাধিকার হলো বিশ্বের সব দেশের সকল
মানুষের কিছু মৌলিক অধিকার।
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স, নারী-পুরুষ আর্থিক অবস্থাভেদে বিশ্বের সব দেশের সকল মানুষের
অধিকার রক্ষার জন্য মানবাধিকার প্রয়োজন।
মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের ছয়টি করণীয় হলো-
১. বাড়িতে, বিদ্যালয়ে এবং
প্রতিবেশীদের মধ্যে কেউ যদি মানবাধিকারবিরোধী কোনো কাজ করে তবে তাকে এ ধরনের কাজ
থেকে বিরত রাখার জন্য সচেতন করব।
২. মানবাধিকারবিরোধী কাজ দেখলে তার প্রতিবাদ করব।
৩. নিজে মানবাধিকারবিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকব।
৪. সরকার কর্তৃক এ লক্ষ্যে করা বিভিন্ন আইন মেনে চলব।
৫. মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন প্রচারণামূলক কাজে
অংশগ্রহণ করব।
৬. মানবাধিকারবিরোধী কোনো কাজ দেখলে প্রয়োজনে আইন 'প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাব।
প্রশ্ন: কখন জাতিসংঘ 'মানবাধিকার সার্বজনীন ঘোষণাপত্র' অনুমোদন করে? কয়েকটি মৌলিক মানবাধিকার উল্লেখ কর।
উত্তর: ১৯৪৮ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতিসংঘ 'মানবাধিকার সার্বজনীন ঘোষণাপত্র' অনুমোদন করে। কয়েকটি মৌলিক মানবাধিকার হলো-
১. মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন।
২. সবার স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার রয়েছে।
৩. সকলের শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে।
৪. প্রত্যেকের নিরাপত্তা লাভের অধিকার রয়েছে।
৫. আইনের চোখে সকলের সমান অধিকার রয়েছে।
৬. সবার ন্যায্য মজুরি পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
৭. নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার আছে।
প্রশ্ন: শিক্ষা গ্রহণ কী ধরনের অধিকার? এটি গুরুত্বপূর্ণ কেন? এ অধিকার রক্ষায় তোমার ছয়টি করণীয় লেখ।
উত্তর: শিক্ষা গ্রহণ মৌলিক মানবাধিকার।
নিজের, সমাজের ও দেশের
কল্যাণের জন্য শিক্ষা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রক্ষায় ছয়টি করণীয় হলো-
১. শিক্ষার অধিকার সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করব।
২. নিজে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করব।
৩. সহপাঠীদের বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসব।
৪. সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিদ্যালয়গামী করার জন্য ব্যবস্থা
গ্রহণ করব এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করব।
৫. দুর্বল ও অমনোযোগী সহপাঠীদের সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রদান
করব।
৬. প্রতিবন্ধী শিশুর অভিভাবকে তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে
পাঠাতে উৎসাহ দেব।
প্রশ্ন: অটিস্টিক শিশুরা কোন সমস্যায়
আক্রান্ত? অটিস্টিক শিশুর
কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর: অটিস্টিক শিশুরা অটিজম সমস্যায়
আক্রান্ত। অটিস্টিক শিশুর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলো-
১. অটিস্টিক শিশু শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ।
২. কোনো কোনো অটিস্টিক শিশু অন্য শিশুদের মতোই লেখাপড়া করতে
পারে।
৩. সকল কাজ বা বিষয় একই নিয়মে করতে চায়। দৈনিক কাজের রুটিন
বদল হলে খুবই উত্তেজিত হয়।
৪. কোনো একটি বিশেষ জিনিসের প্রতি প্রবল আকর্ষণ থাকে এবং
সেটি সবসময় সাথে রাখে।
৫. তারা হয়তো কোনো খেলনা নিয়ে না খেলে বরং শক্ত করে ধরে বসে
থাকে। গন্ধ নেয় বা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে।
৬. কোনো কোনো অটিস্টিক শিশু চৎমকার প্রতিভার অধিকারী হয়।
যেমন- ছবি আঁকা, অঙ্ক করা বা গান গাওয়া।
প্রশ্ন: শিশু পাচার কী? এটি কোন ধরনের অপরাধ? শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ছয়টি উদাহরণ দাও।
উত্তর: অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য শিশুদের
বিদেশে পাচার করে দেওয়া হলো শিশু পাচার।
শিশু পাচার হলো একটি মানবাধিকারবিরোধী অপরাধ। শিশুর অধিকার
লঙ্ঘনের ছয়টি উদাহরণ হলো-
১. শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত।
২. অনেক শিশু খেত-খামারে, ইটের ভাটায়, দোকানে, কারখানায় কাজ করে।
৩. পরিবারে সার্মথ্য না থাকায় অনেক শিশু গৃহহীন।
৪. অনেক সময় সামান্য কারণে বা বিনা কারণে শিশুদের শারীরিক
নির্যাতন করা হয়।
৫. বাড়িতে কাজে সহায়তাকারী শিশুদের যথাযথ পারিশ্রমিক, খাবার চিকিৎসাসেবা ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত করা হয়।
৬. শিশুদের বিদেশে পাচার করা।
প্রশ্ন: অটিজম কী? অটিস্টিক শিশুদের বিকশিত হওয়া প্রয়োজন কেন? অটিস্টিক শিশুর সাথে ভালো আচরণ করার ছয়টি উপায় লেখ।
উত্তর: অটিজম হচ্ছে মস্তিষ্কের বিকাশগত একটি
সমস্যা। অটিস্টিক শিশুদের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগদানের জন্য তাদের
বিকশিত হওয়া প্রয়োজন।
অটিস্টিক শিশুর সাথে ভালো আচরণ করার ছয়টি উপায় হলো-
১. তাদেরকে অকারণে উত্তেজিত না করা।
২. তাদেরকে লেখাপড়ায় সাহায্য করা।
৩. যে জিনিসের প্রতি তারা বেশি আগ্রহী তাদেরকে সেটি দেওয়া।
৪. সুখ-দুঃখে তাদের পাশে থাকা।
৫. তারা যেসব বিষয়ে প্রতিভার অধিকারী হয়, সেসব বিষয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করা এবং সার্বিক সহযোগিতা করা।
৬. তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করা।
কোন মন্তব্য নেই